মিঠামইন উপজেলার ঢাকী চারগ্রামের সংঘর্ষে তিন ভাইসহ নিহত ৫ জন

মিঠামইন প্রতিনিধিঃ  আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে দু্ই পক্ষের সংঘর্ষে তিন ভাইসহ ৫ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় নারী-পুরুষসহ আহত হয়েছেন আরো অর্ধশতাধিক ব্যক্তি।

গতকাল দুপুরে উপজেলার ঢাকি ইউনিয়নের চারিগ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে মিঠামইন থানার ওসি আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন।

নিহতরা হলেন- চারিগ্রাম এলাকার আব্দুল আজিজের তিন ছেলে ফারদিস (৫৫), মাখন (৪৮) ও মাসুম (৪৫), সুজন মিয়ার ছেলে রাজীব (৩২), আইয়ুব রেজার ছেলে মকবুল মিয়া (৩৩)। ঢাকি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, চারিগ্রামের টাগুরিয়া পাড়ার বাসিন্দা আওয়ামী লীগ নেতা সুলেমান ভুঁইয়ার সমর্থকদের সঙ্গে ভুঁইয়া হাটির বিএনপি নেতা পল্লব ভুঁইয়ার সমর্থকদের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। জমি ও মাছের বিল নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে একাধিক মামলাও আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

এরই জের ধরে দুপুর ১২টার দিকে সুলেমান ভুঁইয়ার আত্মীয় সুজন মিয়ার ছেলে রাজীব মিঠামইন বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে নয়াহাটি এলাকায় প্রতিপক্ষের লোকজন তার ওপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে বুকে বল্লমের আঘাতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।

রাজীবের মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে সুলেমান ভুঁইয়ার সমর্থকরা একত্রিত হয়ে প্রতিপক্ষ পল্লব ভুঁইয়ার এলাকার দিকে এগিয়ে যান। এ সময় পল্লবের সমর্থকরাও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রতিরোধে এগিয়ে আসেন। এক পর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে এই সংঘর্ষ চলে। এ সময় বল্লম ও টেঁটাবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে আরো চারজন মারা যান।

নিহতদের মধ্যে তিনজন পল্লব ভুঁইয়ার সমর্থক। এরা হলেন- তিন সহোদর ফারদিস, মাখন ও মাসুম। রাজীব (৩২) ও মকবুল মিয়া (৩৩) সুলেমান ভুঁইয়ার সমর্থক।

আহদের মধ্যে ২০ জনকে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল ও মিঠামইন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

মিঠামইন থানার ওসি আলমগীর হোসেন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

লাশ পাঁচটি উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে এখনো কোনো মামলা বা কাউকে আটক করা হয়নি বলে জানান ওসি।

ফরিদপুরে বিয়ে বাড়িতে ডাকাতিকালে গুলিতে দুইজন নিহত

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায় ডাকাতের গুলিতে ২ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরো কয়েকজন আহত হয়েছেন।

গতকাল ভােরে উপজেলার মৃধাডাঙ্গী গ্রামের আনসার ফকিরের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন মো. সাজ্জাদ মৃধা (৩০) ও সেন্টু মৃধা (২৮)। তারা সম্পর্কে চাচাতো ভাই।

চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রামপ্রসাদ ভক্ত জানান, গত বুধবার আনসার ফকিরের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। ভোররাতে সেই বাড়িতে প্রথম ডাকাত দল হানা দেয়। ডাকাতরা বাড়ি থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়।

আনসার ফকিরের বাড়ির পাশেই সেন্টু ও সাজ্জাদের বাড়ি। ডাকাত দল ফিরে যাওয়ার সময় সাজ্জাদের বাড়িতেও হানা দেয় এবং দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে। তখন সেন্টু টের পেয়ে গ্রামের লোকজনকে ডাক দেয়। লোকজন এগিয়ে এলে ডাকাত দল দৌড়ে নদীর পাড়ের দিকে চলে যায়। লোকজনও পেছন পেছন ডাকাতদের তাড়া দেয়। তখন ডাকাতরা গুলি করে। এতে চারজন আহত হন।

ওসি জানান, আহতদের উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক সাজ্জাদ ও সেন্টু মৃধাকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত অন্য দুজনের মধ্যে একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর